
বর্তমানে হালাল পণ্যের বৈশ্বিক বাজার প্রায় তিন লাখ কোটি ডলারের। তবে বাংলাদেশের রপ্তানি ১০০ কোটি ডলারেরও কম। বাংলাদেশে একটি কার্যকর হালাল ইকোসিস্টেমের অনুপস্থিতির পাশাপাশি দেশে হালাল পণ্যের অ্যাক্রিডিটেড সার্টিফিকেট বা সনদ প্রদানে স্বতন্ত্র কর্তৃপক্ষ নেই। এ খাতের বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হালাল পণ্যের জন্য স্বতন্ত্র বোর্ড গঠন অত্যন্ত জরুরি। গতকাল শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশের হালাল শিল্প খাতের উন্নয়ন : সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক ফোকাস গ্রুপ আলোচনায় এমন মত দেওয়া হয়। ঢাকা চেম্বারের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যা জানানো হয়।
স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ বছরে মাত্র ৮৫ কোটি ডলারের হালাল পণ্য রপ্তানি করে, যার বেশির ভাগই কৃষিভিত্তিক পণ্য। হালাল শিল্পের বিশাল সম্ভাবনাময় হলেও, বাংলাদেশের সামনে একাধিক কাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক চ্যালেঞ্জ থাকায় এ খাতের বিকাশ কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পরিলক্ষিত হচ্ছে না। হালাল পণ্যের আন্তর্জাতিক মান বজায় না রাখা, লজিস্টিক অবকাঠামোর স্বল্পতা, শুল্কহার ও সার্টিফিকেট প্রাপ্তির জটিলতা, আধুনিক পরীক্ষাগারের অপ্রতুলতা, দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনশক্তির অভাবসহ সার্বিকভাবে হলাল ইকোসিস্টেম না থাকার বিষয়টি এ খাতের কাঙ্ক্ষিত উন্নতিতে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা। দেশের হালাল সার্টিফিকেটের বৈশ্বিক স্বীকৃতি প্রাপ্তির লক্ষ্যে একটি স্বতন্ত্র বোর্ড গঠন করা একান্ত অপরিহার্য। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মানের পরীক্ষাগার স্থাপনে সরকারি-বেসরকারি খাতের যৌথ উদ্যোগ দরকার।
মূল প্রবন্ধে ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মমিনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে ইসলামিক ফাউন্ডেশন এবং বিএসটিআই দুটি প্রতিষ্ঠান হালাল পণ্যের সনদ দেয়, যা অনেকে ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি করছে।
নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ডের মহাপরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক মো. আরিফুল হক, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক বেবী রাণী কর্মকার, বিএসটিআইর উপপরিচালক (হালাল সার্টিফিকেশন) এসএম আবু সাইদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক ড. মো. আবু সালেহ পাটোয়ারী, বেঙ্গল মিটের হেড অব সাপ্লাইচেইন এজিএম সায়েদুল হক ভূঁইয়া, মেটামরফোসিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিক এম আলম এবং প্যারাগন গ্রুপের সহকারী ম্যানেজার (রপ্তানি) আবুল কালাম আজাদ অংশ নেন।
বেবী রাণী কর্মকার বলেন, হালালের বৈশ্বিক বাজার প্রতিবছর প্রায় ১৩ শতাংশ হারে বাড়ছে। সম্ভাবনাময় এ খাতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ বাড়ানোর সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি। মো. আরিফুল হক বলেন, এলসিডি পরবর্তী সময়ে রপ্তানি সম্প্রসারণে সম্ভাবনায় হালাল খাত গুরুত্বপূর্ণভূমিকা রাখতে পারে।