

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্রী নওরিন নুসরাত স্নিগ্ধাকে হত্যা মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) ফের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। নওরিনের বাবা খন্দকার নজরুল ইসলামের নারাজির আবেদন মঞ্জুর করে আজ মঙ্গলবার ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট মো. তাজুল ইসলাম সোহাগ এই আদেশ দেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. মহিউদ্দীন বলেন, নওরিনের স্বামী ইব্রাহিম খলিল ও শাশুড়ি শামসুন্নাহারকে আসামি করে মামলাটি করা হলেও পিবিআই তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি মর্মে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তাই নারাজি দাখিল করলে আদালত তা মঞ্জুর করে সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’
নওরিনের পরিবারের মামলায় অভিযোগ করে, ২০২৩ সালের ২১ জুলাই ইব্রাহিমের সঙ্গে নওরিন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ইব্রাহিম আশুলিয়ায় একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। বিয়ের পর নওরিন পড়ালেখা করতে চাইলেও তার স্বামী ইব্রাহিম এবং শাশুড়ি শামসুন্নাহার তাকে আর লেখাপড়া করাতে চাননি। বিয়ের দুই দিন পর থেকেই নওরিনকে লেখাপড়া না করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। তাকে মানসিক নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে।
২০২৩ সালের ৩ আগস্ট এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। তখন ইব্রাহিম নওরিনকে তালাক দেওয়ার হুমকি দেন। নওরিন মানসিকভাবে ভেঙে পড়ায় বাবার বাড়িতে চলে যেতে চান। তবে তারা তাকে আটকে রাখেন। বিষয়টি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাবাকে জানান নওরিন।
ইব্রাহিম তার শ্বশুরকে জানান, নওরিনকে বাড়ি যেতে দেওয়া হবে না। ২০২৩ সালের ৮ আগস্ট নওরিনকে বাসায় আটকে রেখে স্বামী বাইরে বের হন। নওরিনের মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। খন্দকার নজরুল ইসলাম ইব্রাহিমকে ফোন করলে তিনি জানান, বাসায় ঢোকা যাবে না, তাকে আটকে রাখা হয়েছে।
এই অবস্থায় টাঙ্গাইলের গ্রামের বাড়ি থেকে মেয়েকে দেখার জন্য আশুলিয়ার উদ্দেশে আসেন খন্দকার নজরুল ইসলাম। বিকেলের দিকে ফোন করলে ইব্রাহিম জানান, তার মেয়ে ছয়তলা থেকে লাফ দিয়েছেন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিকেলে হাসপাতালে পৌঁছে নজরুল তার মেয়ে নওরিনের লাশ দেখতে পান।
নওরিনের মৃত্যুর পর ২০২৩ সালের ২০ আগস্টনওরিনের বাবা আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
