চান্দিনায় ৪০ লাখ টাকার উন্নয়ন কাজে অনিয়মের অভিযোগ


কুমিল্লার চান্দিনা পৌর ভবন সংস্কারে ৪০ লাখ টাকার উন্নয়ন কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। পৌর ভবনের প্রধান ফটকসহ সীমানা প্রাচীর উন্নয়ন কাজের অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে অভিযোগ করেন মো. আসাদুজ্জামান দুলাল নামের এক ব্যক্তি।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) পৌর প্রশাসক বরাবর লিখিত ওই অভিযোগটি করেন তিনি।

লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন- পৌর ভবনের ৪০ লক্ষ টাকার সংস্কার কাজের মধ্যে ১৬ লাখ টাকার এসএস (স্টেইলনেস স্টিল) গেট ও গ্রিলে নিম্নমানের মালামাল সরবরাহ করা হয় এবং শিডিউল মোতাবেক কাজ হচ্ছে না। বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে ক্ষতির মুখে পড়বে পৌরসভা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়- কুমিল্লা জেলার ৭টি পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের (আইডিএফপিসি) আওতায় চান্দিনা পৌরসভার দুই পাশের সীমানা প্রাচীর, তার উপরে এসএস গ্রিল এবং ছোট-বড় মোট ৪টি ফটকে এসএস গেট নির্মাণ কাজে ২০২৪ সালের ২০ নভেম্বর দরপত্র আহ্বান করা হয়। ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ের ওই কাজটি পায় মেসার্স নজরুল এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ১.১ মিটার উচ্চতা ও ৭৪ মিটার দৈর্ঘ্যের সীমানা প্রাচীরের গ্রিল এবং ছোট-বড় চারটি গেটে ১.৫ এমএম পুরুত্বে এসএস পাইপে গ্রীল ও গেটের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ লাখ টাকা। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গেটের ফ্রেমে ১.৫ এমএম পাইপ দিলেও বাকি সবগুলোতে ব্যবহার করেছে ১ এমএম পুরুত্বের এসএস পাইপ। এছাড়া সীমানা প্রাচীরে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের ইট ও কংক্রিট। এ কাজের মধ্য দিয়ে ওই ঠিকাদার উত্তোলন করেছে তার প্রথম বিল।

অভিযোগকারী মো. আসাদুজ্জামান জানান, পৌরসভা ভবনের উন্নয়ন কাজে যদি এমন অনিয়ম ও দুর্নীতি হয় তাহলে বাকি কাজ চলবে কিভাবে? এখানে পৌরসভার একাধিক প্রকৌশলী আছেন, প্রতিদিন তাদের চোখের সামনেই এমন অনিয়মের কাজ হচ্ছে কিভাবে? আমি চ্যালেঞ্জ করে বলবো এখানে ১.৫ এমএম এসএস পাইপ দেওয়া হয়নি, এখানে সর্বোচ্চ ১ এমএম এসএস পাইপ ব্যবহার করা হয়েছে। এতে খরচ কমবে ৪০ শতাংশ।

মেসার্স নজরুল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. নজরুল ইসলাম জানান, আমি ওয়ার্কশপে ১.৫ এমএম স্টেইলনেস স্টিলের পাইপ দিয়েই অর্ডার দিয়েছি। কিন্তু ওই ওয়ার্কশপ মালিক যদি কোনো মালে অনিয়ম করে থাকে তাহলে সেগুলো আমি শিডিউল মোতাবেকই করে দেবো।

চান্দিনা পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাত হাসান জানান, সবগুলো কাজ দেখার তো সুযোগ নেই। কাজ শেষ হলে শিডিউল মোতাবেক আমরা সব কাজ দেখে বুঝে নেবো। কাজের মান খারাপ হলে ঠিকাদার পরিবর্তন করে নতুন করে লাগাতে হবে।

পৌর প্রশাসক ও ইউএনও মোহাম্মদ আশরাফুল হক জানান, আমরা ঠিকাদারকে এ পর্যন্ত কাজের মোট বিলের ১৫ শতাংশ বিল দিয়েছি। কাজ এখনো অনেক বাকি। অভিযোগকারীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঠিকাদারকে আমরা শিডিউল মোতাবেক কাজ করতে চিঠি দিয়েছি। এখানে কাজে ফাঁকি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।


 

Leave a Reply

Scroll to Top