৫৭ বছরে প্রবেশ করেও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন জুলিয়া রবার্টস।

জুলিয়া রবার্টস

হলিউডের অস্কারজয়ী অভিনেত্রী জুলিয়া রবার্টস। সাড়ে তিন দশকের ক্যারিয়ারে তিনি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন অসাধারণ কিছু চলচ্চিত্র। ৫৭ বছর বয়সেও সিনেমায় কাজ করা থামিয়ে দেননি এই অভিনেত্রী। আজও তাঁর অভিনয়, তাঁর হাসি দর্শকদের মুগ্ধ করে।

আগামী মাসে মুক্তি পাচ্ছে জুলিয়ার নতুন একটি মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলার সিনেমা, যার নাম ‘আফটার দ্য হান্ট’। এটি পরিচালনা করেছেন খ্যাতিমান নির্মাতা লুকা গুয়াডাগ্নিনো, যিনি আবেগপ্রবণ ও নান্দনিক চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।

‘আফটার দ্য হান্ট’ ছবির গল্প ঘুরে বেড়াচ্ছে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খ্যাতনামা প্রফেসর আলমা অলসনের (জুলিয়া রবার্টস) চারপাশে। আলমা তাঁর শিক্ষার্থী ও সহকর্মীদের মধ্যে অত্যন্ত সমাদৃত। তাঁর জীবন মনে হয় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে, কিন্তু এক অপ্রত্যাশিত ঘটনায় সবকিছু থমকে যায়। আলমার প্রিয় ছাত্র মেগি (আয়ো এডেবিরি) হেনরিক (অ্যান্ড্রু গারফিল্ড) নামে এক সহকর্মীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তোলে। এই অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে একটি বিশাল বিতর্ক সৃষ্টি করে। ছাত্র-ছাত্রী, প্রশাসন এবং মিডিয়া– সবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে আলমা।

এই পরিস্থিতিতে আলমা নিজেই নিজের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়। অতীতের কিছু অপ্রকাশিত ও সংরক্ষিত ঘটনা একে একে তাঁর মনে ফিরে আসে, যা তাঁর ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনকে ওলটপালট করে দেয়। আলমা বুঝতে শুরু করেন ক্ষমতা, বিশ্বাস এবং নৈতিকতার মধ্যে লুকিয়ে থাকা সীমারেখা কতটা জটিল।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের একটি উৎসবে সিনেমাটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয়। সেখানে রবার্টস বলেন, ‘সিনেমার বিষয়বস্তু যতই গুরুতর হোক, আমার মনে হয় ছবির মূলে আছে ভালোবাসা আর ক্ষমা।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, একটি গান আছে, যা ছবিতে সাতবার উপস্থাপন করা হয়েছে এবং যার মূল সুরই ক্ষমা।

রবার্টসের ভাষ্যে, ‘পরিচালক গুয়াডাগ্নিনো ও চিত্রনাট্যকার নোরা গ্যারেট গল্পটিকে দেখেছেন মানুষ কীভাবে নিজের ভেতরের অস্বীকার ভেঙে সত্যকে গ্রহণ করে সেই দিক থেকে। আমরা আসলে ভেতরে কে, কেন আমরা ভান করি, আর আমরা যেসব কাজ করি, তার আসল কারণ কী। আমার মনে হয় এই সুন্দর গল্পটিকে ভালোবাসা আর ক্ষমার গল্প হিসেবে সবার দেখা উচিত।’

জানা গেছে, ছবিতে শুধু যৌন নিপীড়নের অভিযোগই নয়; বরং সত্য ও মিথ্যার ধূসর সীমা, বন্ধুত্ব ও বিশ্বাসঘাতকতা, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার গভীর প্রশ্নগুলোও তুলে ধরা হয়েছে। আলমার মানসিক যাত্রা, অনিশ্চয়তা এবং তাঁর নিজস্ব সিদ্ধান্তের প্রভাব দর্শককে ধীরে ধীরে আবর্তিত করে, যেখানে প্রতিটি দৃশ্য নতুন রহস্য ও উত্তেজনা তৈরি করে।

ইতালি ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত এই সিনেমা আগামী ১০ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পাবে। নির্মাতা মনে করেন, এই সিনেমার মাধ্যমে জুলিয়া রবার্টস তাঁর ক্যারিয়ারে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছেন। তাঁর অভিনয় ও সিনেমার থিম দর্শকদের মধ্যে গভীর আলোচনা ও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

Leave a Reply

Scroll to Top