

টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করলেও ওয়ানডে সিরিজে আফগানিস্তানের বিপক্ষে কাঙ্ক্ষিত শুরু করতে পারল না বাংলাদেশ। আবুধাবিতে আজ তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে দলটির বিপক্ষে ৫ উইকেটে হেরেছে টাইগাররা। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করা বাংলাদেশ ২২২ রানের লক্ষ্য রাখে আফগানদের সামনে। মামুলি এই লক্ষ্য ১৭ বল হাতে রেখেই পেরিয়ে যায় হাশমতউল্লাহ শহিদির দল।
২২২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই আফগান ওপেনার রাহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। ৫২ রানের জুটি গড়েন তারা। ৫২ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর ৬ রান যোগ হতেই তিনে নামা সেদিকুল্লাহ আতাল ফিরলে কিছুটা চাপে পড়ে আফগানরা। তবে তৃতীয় উইকেট জুটিতে গুরবাজ ও রহমত শাহ ৭৮ রানের জুটি গড়ে সেই চাপ অনেকটাই সামলে নেন।
১৩৬ রানের মাথায় পরপর দুই ওভারে গুরবাজ ও রহমত ফিরলে জমে যায় খেলা। দুজনই কাটায় কাটায় ফিফটি করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। তবে সাময়িক আশার আলো দেখলেও পঞ্চম উইকেট জুটিতে মেহেদী হাসান মিরাজদের চরম হতাশ করেন হাশমতউল্লাহ শাহিদি ও আজমাতুল্লাহ ওমারজাই। ধীরস্থির ব্যাটিংয়ে জুটি শুরু করার পর আস্তে আস্তে চালিয়ে খেলেন তারা। ৭০ বলে ৫৯ রান যোগ করেন এই দুজন। তাদের জুটি যখন ভাঙে তখন জয় থেকে মাত্র ২৭ রান দূরে আফগানিস্তান।
বল হাতে আগুন ঝড়ানো ওমারজাই ৪৪ বলে ৪০ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেন। তিনি আউট হলেও দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক হাশমত। ৪৬ বলে ৩৩ রানে অপরাজিত ছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। আরেক পাশে ৮ বলে ১১ রানে অপরাজিত ছিলেন মোহাম্মদ নবি। ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তাতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় আফগানরা।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করে মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাওহিদ হৃদয়ের ফিফটির পরও ইনিংসের ৭ বল বাকি থাকতেই ২২১ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। আবুধাবিতে টসে জিতে ব্যাটিং করতে নেমে দারুণ শুরুর আভাসই দিয়েছিলেন তানজিদ হাসান তামিম ও অভিষিক্ত সাইফ হাসান। তবে দলীয় ১৮ রানে তানজিদ ও ২৫ রানে শান্তর বিদায়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর ভালোই খেলছিলেন টি-টোয়েন্টি সিরিজে আলো ছড়ানো সাইফ ও হৃদয়। পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৫১ রান তুলে ফেলে টাইগাররা। তবে দলের চাপ বাড়িয়ে দলীয় ৫৩ রানে বিদায় নেন সাইফও। ৩৭ বলে ৪টি চারে ২৬ রান করেছেন তিনি।
দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে বড় শট খেলা থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেয় বাংলাদেশ। ধীরগতির জুটি গড়েন তাওহিদ হৃদয় ও মেহেদী হাসান মিরাজ। ২৬তম ওভারের প্রথম বলে দলীয় শতরান পূরণ করে বাংলাদেশ। তবে শতরান করে কিছুটা আক্রমণাত্মক হন এই দুজন। দলকে দেড় শ পার করিয়ে ১৫৪ রান পর্যন্ত নিয়ে যান এই দুজন। শেষমেশ রান আউটে কাটা পড়ে থামে এ জুটি। ততক্ষণে ১৪১ বলে ১০১ রানের জুটি গড়ে ফেলেছেন তারা।
৮৫ বলে ১টি চার ও ৩ ছক্কায় ৬০ রান করেন হৃদয়। ওয়ানডেতে এটি টানা তিন ফিফটি হৃদয়ের। আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে ফিফটির আগে গত জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা সিরিজের শেষ দুই ওয়ানডেতেও ফিফটি করেছিলেন হৃদয়। এটি ওয়ানডেতে হৃদয়ের দশম ফিফটি। হৃদয়ের আউটের পর ১৭৫ রানের মাথায় ফেরেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। ৮৭ বলে একটি করে চার-ছক্কায় ৬০ রান করেন তিনি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি মিরাজের সপ্তম ফিফটি।
মিরাজের আউটের পর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস। ২০৬ রানের মধ্যে একে একে ফিরে যান জাকের আলি, নুরুল হাসান সোহান, হাসান মাহমুদ ও তানজিম হাসান সাকিব। শেষদিকে তানভির ইসলাম ৮ বলে ১১ রান করলে ২২১ রানে থামে বাংলাদেশ।