ঘুরতে ভালোবাসে না এমন মানুষ খুব কমই আছে। সুযোগ পেলেই যে কেউ ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে যান। আজ বিশ্ব পর্যটন দিবস। ভ্রমণপিপাসুদের জন্য দিনটি অনেক গুরুত্ব বহন করে। আমাদের আজকের আয়োজন ভ্রমণ গল্পের সিনেমা নিয়ে। লিখেছেন- ফয়সাল আহমেদ
দারুচিনি দ্বীপ (২০০৭)
হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস দারুচিনি দ্বীপ অবলম্বনে সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন তৌকীর আহমেদ। অভিনয় করেছেন রিয়াজ, মম, মোশাররফ করিম, ইমন, বিন্দু, রোমানাসহ আরও অনেকে। সিনেমার গল্পে দেখা যায়, একদল স্বপ্নবাজ তরুণের ইচ্ছা ঘুরতে যাওয়া। তারা সবাই ঠিক করে দারুচিনি দ্বীপ ঘুরতে যাবেন। এই দলের মূল চরিত্র হলো শুভ্র। শুভ্র শান্ত স্বভাবের এবং চোখে চশমা পরে, যে কারণে তাকে নিয়ে একটু সমস্যাও দেখা দেয়। তবে দলের অন্য সদস্যরা তাকে ছাড়া যেতে নারাজ। অবশেষে শুভ্রও তাদের টিমে যোগ দেন। সিনেমায় একদিকে যেমন তাদের বন্ধুত্ব, স্বপ্ন ও ভালোবাসার গল্প উঠে আসে, তেমনি অন্যদিকে তাদের সহজ-সরল পারিবারিক জীবনের নানা ঘটনাও দেখানো হয়। প্রতিটি চরিত্রই তাদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সমস্যা, সীমাবদ্ধতা এবং স্বপ্ন নিয়ে সংগ্রাম করে। অবশেষে সব বাধা পেরিয়ে তারা একসঙ্গে ট্রেনে করে দারুচিনি দ্বীপের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। এই যাত্রার মধ্য দিয়েই তাদের জীবনের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়।
চাঁদের পাহাড় (২০১৩)
কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় পরিচালিত চাঁদের পাহাড় মুক্তি পায় ২০১৩ সালে। সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন দেব (শঙ্কর)। প্রখ্যাত সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিখ্যাত উপন্যাস চাঁদের পাহাড় অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে এই চলচ্চিত্র। গল্পের নায়ক শঙ্কর রায় চৌধুরী গ্রামের এক সাধারণ ছেলে। তার রক্তে ভ্রমণের নেশা। সে সব ছেড়ে আফ্রিকার দুর্গম অঞ্চলে যেতে চায়। ভাগ্যের জোরে সে উগান্ডা রেলওয়েতে চাকরি নিয়ে সুদূর আফ্রিকায় পাড়ি জমায়। আফ্রিকায় নতুন জীবন ও পরতে পরতে লুকিয়ে আছে এ সিনেমায় অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ।
ইনটু দ্য ওয়াইল্ড (২০০৭)
গ্রাজুয়েশন শেষ করে পরিবার, বাড়িঘর, শহুরে আরাম-আয়েশ ইত্যাদি প্রায় সব ল্যাঠা চুকিয়ে একজন দৃঢ়চেতা রোমাঞ্চপ্রিয় যুবকের ভবঘুরের জীবন বেছে নেওয়া মানুষের কাহিনি এটি। একাকী, অজানার উদ্দেশ্যে, প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্যে... যে ‘সুপারট্রাম্প’ সমাজের মুখস্থ সামাজিকতা থেকে অহর্নিশ মুক্তি চায়। মূলত এটি মনে প্রবলভাবে দাগ কেটে যাওয়ার মতো একটি সিনেমা।
দ্য মোটরসাইকেল ডায়রিজ (২০০৪)
মহান বিপ্লবী চে গুয়েভারার জীবনীর কিয়দংশ এটি। যে সময়টাতে মেডিক্যাল স্টুডেন্ট চে তার বায়োকেমিস্ট বন্ধু গ্রানাডোকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে চষে বেড়ায় দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশ। মোটরসাইকেল নষ্ট, পকেটে কানাকড়ি নেই, তবু মাসের পর মাস চলতে থাকে বন্ধুর পথচলা। অভিনেতা গায়েল গার্সিয়া বার্নাল অভিনীত এক অনবদ্য সিনেমা এটি।
ওয়ান টোয়েন্টি সেভেন আওয়ার্স (২০১০)
অনেকের কাছেই এটি ‘বেস্ট সারভাইভাল মুভি’ হিসেবে পরিচিত। টগবগে এক তরুণ পর্বতারোহীর পাহাড়ের ফাঁদে আটকে পড়া, মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখা এবং তা থেকে উত্তরণের নিরন্তর প্রচেষ্টা। ছবিটি সুকান্তের পঙ্ক্তিগুলো বারবার মনে করিয়ে দেয়। বিখ্যাত নির্মাতা ড্যানি বয়েল পরিচালিত সিনেমা এটি।
গুডবাই বার্লিন (২০১৬)
গাড়ি চুরি করে ভিন্নরকম মানসিকতার দুই কিশোরের জার্মানিজুড়ে শহরে, পল্লীতে, সবুজ প্রান্তরে দিনরাত টো-টো করে ঘুরে বেড়ানো এবং বাড়ি ফিরে কোনো এক বিশৃঙ্খল বিন্দুতে জীবনের মানের আচমকা স্পর্শ টের পাওয়াই হলো এই সিনেমার গল্প। মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো একটি সিনেমা এটি।