[caption id="attachment_8037" align="aligncenter" width="600"]
সংগৃহীত ছবি [/caption]
ইসরায়েলের আশদোদ বন্দরে নেওয়া হয়েছে গাজাগামী জাহাজবহর থেকে আটক হওয়া বাংলাদেশি আলোকচিত্রী ও মানবাধিকার কর্মী শহিদুল আলমসহ অন্যান্য অধিকারকর্মীদের। গতকাল বুধবার রাতে দখলদার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বুধবার গাজা উপকূলে পৌঁছানোর আগেই আন্তর্জাতিক জলসীমাতে আটকে দেওয়া হয় ফ্লোটিলার ৯টি জাহাজ। সেই সঙ্গে দেড়শো স্বেচ্ছাসেবককে আটক করে ইসরাইলি নৌবাহিনী।
তেলআবিব দাবি করেছে, বর্তমানে আটককৃতরা সবাই সুস্থ আছেন এবং দ্রুতই তাদের নিজ নিজ দেশে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
এই নৌবহরের ‘কনশানস’ নামের একটি জাহাজে ছিলেন বাংলাদেশি আলোকচিত্রী ও মানবাধিকার কর্মী শহিদুল আলম। বর্তমানে আটক অবস্থায় অন্যান্য অধিকারকর্মীদের সঙ্গে ইসরাইলে আছেন তিনি।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) আয়োজিত ৯টি জাহাজের বহরটি দুই সপ্তাহ আগে ইতালি থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। একটি বড় জাহাজে প্রায় ১০০ জন এবং বাকি আটটি ছোট নৌযানে আরও ৫০ কর্মী ছিলেন। আয়োজকদের দাবি, অন্তত দুজন ইসরাইলি নাগরিকও এই নৌবহরে ছিলেন।
টাইমস অফ ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার ভোরে গাজা উপকূল থেকে প্রায় ১৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভূমধ্যসাগরে ইসরাইলি নৌবাহিনীর বিশেষ ইউনিট শায়েতেত ১৩ এবং অন্যান্য বাহিনী দ্রুত অভিযান চালিয়ে ৯টি জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ‘কনশানস’ নামের ৬৮ মিটার দীর্ঘ যাত্রীবাহী জাহাজে নামার জন্য কমান্ডোরা হেলিকপ্টার থেকে রশি বেয়ে নামেন।
ফ্লোটিলা সংগঠকরা এক বিবৃতিতে অভিযোগ করেছেন, ‘আমাদের জাহাজে ইসরায়েলি সামরিক হেলিকপ্টার থেকে হামলা চালানো হয়েছে এবং আমাদের আটটি নৌযান অবৈধভাবে আটক ও ছিনতাই করা হয়েছে।’
এফএফসি জানিয়েছে, ‘বিশ্বজুড়ে মানবাধিকারকর্মী, চিকিৎসক ও সাংবাদিকদের আটক করে অজানা স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’ তাদের দাবি, নৌবহরটি ১ লাখ ১০ হাজার ডলারের বেশি মূল্যের ওষুধ, রেসপিরেটরি সরঞ্জাম ও পুষ্টি সহায়তা বহন করছিল, যা গাজার হাসপাতালগুলোর জন্য পাঠানো হচ্ছিল।
এর আগের সপ্তাহে গাজামুখী ৪০টিরও বেশি নৌকা আটক করে ইসরাইল, যাতে ৪৫০ জনেরও বেশি কর্মী ছিলেন।
ইসরায়েল পূর্বেও গাজাগামী জাহাজে হামলা চালিয়ে ত্রাণ সামগ্রী জব্দ করেছে এবং কর্মীদের আটক করে পরে বহিষ্কার করেছে। প্রায় ২৪ লাখ মানুষের বসবাসের গাজা উপত্যকায় ১৮ বছর ধরে ইসরায়েল অবরোধ বজায় রেখেছে। গত মার্চ মাসে তারা সীমান্ত বন্ধ করে খাদ্য ও ওষুধ প্রবেশে বাধা দিয়ে অবরোধ আরও কঠোর করে, যার ফলে অঞ্চলটি দুর্ভিক্ষে পতিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৬৭ হাজার ১০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। অব্যাহত বোমাবর্ষণে অঞ্চলটি এখন কার্যত বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।