
ভারতের লাদাখ রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন ক্রমেই বিস্ফোরক রূপ নিচ্ছে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বুধবার হঠাৎই হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। লেহ শহরে পুলিশের গাড়ি ভস্মীভূত, বিজেপির দপ্তর লক্ষ্য করে বিক্ষোভ, সংঘর্ষ, কাঁদানে গ্যাস, ইঁটপাটকেল—সব মিলিয়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে গোটা এলাকায়।
পিটিআই সূত্রের খবর, ২০১৯ সালের আগস্টে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে লাদাখ গঠন করা হয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল সাময়িকভাবে মর্যাদা কেড়ে নেওয়া হয়েছে, পরে তা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু এত বছরেও সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে লাদাখবাসী।
পরিবেশকর্মী সোনম ওয়াংচুক টানা ১৫ দিন ধরে অনশনে আছেন। তার শারীরিক অবস্থা ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। অনশনে থাকা আরও দু’জন হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খবর ছড়াতেই উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। সকাল থেকে শত শত মানুষ রাজপথে নেমে আসেন। স্লোগান ওঠে—‘রাজ্যের মর্যাদা চাই।’ মিছিল বিজেপি দপ্তরের সামনে গিয়ে পৌঁছাতেই সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে, বিক্ষোভকারীরা পাল্টা ইঁটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। মুহূর্তেই কয়েকটি গাড়ি আগুনে জ্বলে ওঠে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে দিল্লি উদ্বিগ্নভাবে নজর রাখছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের ঘোষণা করেছে। আগামী ৬ অক্টোবর লেহ অ্যাপেক্স বডি ও কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা। তবে লাদাখের প্রতিনিধিদের অভিযোগ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাকি জানিয়ে দিয়েছেন পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা ছিল ভুল এবং তাদের দাবিদাওয়া খারিজ করা হয়েছে। এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই উত্তেজনা আরও বাড়ে।
স্থানীয়দের বিশ্বাস, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের জন্য সরাসরি বিজেপিই দায়ী। তাদের বক্তব্য—‘আর সময় নষ্ট নয়, এখনই রাজ্যের মর্যাদা ফেরাতে হবে।’ আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন চলতেই থাকবে।
লাদাখের এই গণবিক্ষোভ বিজেপিকে কার্যত কোণঠাসা করে ফেলেছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে পারে। কারণ প্রতিশ্রুতি পূরণ না হলে মানুষের আস্থা ফেরানো আর সহজ হবে না।