প্রিন্ট এর তারিখঃ অক্টোবর ৭, ২০২৫, ৮:২৯ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৫, ১০:০০ পূর্বাহ্ণ
বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট এ্যানির বক্তব্যে ক্ষোভ, ইসলামী আন্দোলনের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি
[caption id="attachment_4943" align="aligncenter" width="600"]
লক্ষ্মীপুর সদর পূর্ব বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে বক্তব্যে দেন শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি। গতকাল জেলা আউটডোর স্টেডিয়াম মাঠে ছবি: সত্যের পথে[/caption]
লক্ষ্মীপুরে চরমোনাই পীরের সমালোচনা করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির দেওয়া বক্তব্যে ক্ষুব্ধ বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। এ্যানির বক্তব্যের জন্য তাঁকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে গতকাল সোমবার রাতে বিবৃতি দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন লক্ষ্মীপুর জেলা শাখা।
ইসলামী আন্দোলন লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দেলোয়ার হোসাইন ও সেক্রেটারি জহির উদ্দিনের যৌথ বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন প্রচার ও দাওয়াহবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান। বিবৃতিতে বলা হয়, একটি জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম সম্পর্কে বিএনপির নেতা এ্যানি যে অশ্লীল, অশালীন ও মিথ্যা-বানোয়াট বক্তব্য দিয়েছেন, তা রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত।
ইসলামী আন্দোলনের নেতারা বলেন, মূলত ৫ আগস্টের পর ইসলামপন্থীদের ঐক্য ও এক বাক্সে ভোটের প্রক্রিয়াকে বিএনপি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না। নির্বাচনে বিএনপির জন্য একমাত্র বাধা ‘ইসলামী জোট’। এতে তাদের ভরাডুবি জেনে বিএনপি ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল ও জাতীয় ব্যক্তিদের নিয়ে মিথ্যাচার ও কুৎসা রটনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। বেইমান তো তারা, যারা শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে।
বিবৃতিতে বিএনপিকে স্বৈরাচারের সঙ্গী বলে দাবি করে বলা হয়, তারা ২০১৮ সালের অবৈধ নির্বাচনকে স্বীকৃতি দিয়ে সংসদে তাদের ছয়জন এমপি পাঠিয়েছে। ২০১৮-এর ডামি নির্বাচনের স্বীকৃতিদানকারী দল হলো বিএনপি। এখন তারা পাগলের মতো আবোলতাবোল বলে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে চাচ্ছে। নিজেদের দোষ আড়াল করার হীন চেষ্টা করছে। পাবলিক সেন্টিমেন্টকে ভিন্ন দিকে ডাইভার্ট করার পাঁয়তারা করছে বিএনপি।
বিবৃতিতে এ ছাড়া বিএনপির উদ্দেশে বলা হয়, ‘জাতীয় চাঁদাবাজেরা মিথ্যা ছাড়া কিছু বলতে পারে না। মিথ্যা কথা বলাই এ্যানি চৌধুরীরদের পুঁজি, যা বাংলাদেশের মানুষ এখন বুঝে গেছে। আমরা তার মিথ্যা কথা প্রত্যাহারের আহ্বান জানাই।’
বিবৃতি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে ইসলামী আন্দোলন লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দেলোয়ার হোসাইন বলেন, ‘এ্যানির মতো একজন নেতার এ রকম দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য রাজনৈতিক ও সচেতন মহলকে ব্যথিত করেছে। আমরা তাঁকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
এর আগে গত সোমবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা আউটডোর স্টেডিয়াম মাঠে সদর পূর্ব বিএনপির প্রতিনিধি সম্মেলনে বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন ও জামায়াতে ইসলামীর কড়া সমালোচনা করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। এ সময় তিনি বলেন, চরমোনাই পীর জাতীয় বেইমান ও ভণ্ড। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পতনে কোনো ভূমিকা ছিল না ইসলামী আন্দোলনের।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এ্যানি বলেন, বিগত ১৭ বছরের ফ্যাসিস্টবিরোধী কোনো আন্দোলনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, হাতপাখা বা চরমোনাই পীরের কোনো ভূমিকা ছিল না; বরং স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সঙ্গে তাদের সখ্য ছিল। বর্তমানে নির্বাচন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে দলটি। নির্বাচন বিঘ্নিত করতে নানা চক্রান্ত করা হচ্ছে। ইসলামের নামে তারা চক্রান্ত করছে। ষড়যন্ত্র করছে। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এসব জাতীয় বেইমানদের চিহ্নিত করে রাখতে হবে। কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না। ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবিলা করা হবে।
ওই সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীরও সমালোচনা করে এ্যানি বলেন, ‘তারা ’৮৬ ও ’৯৬ সালে বিভিন্নভাবে শুধু আমাদের অসহযোগিতা করে নাই, পুরো জাতিকে অসহযোগিতা করেছে। হাসিনাকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে তাদের সঙ্গে থেকে জাতীয় বেইমান হিসেবে, আত্মস্বীকৃত বেইমান হিসেবে তারা বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।’

Sotterpothe