বিএনপির সাবেক মহাসচিবের পরিবারের কাছে যুবদল পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ।

ফাইল ছবি

বিএনপির সাবেক মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের (প্রয়াত) স্বজনের কাছে যুবদলের নেতা পরিচয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার। তবে ঘটনার তিন দিন পার হলেও জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের পুত্রবধূ তানজিল হামিদ মিতুল গতকাল সোমবার সত্যের পথকে বলেন, গত শুক্রবার রাতে মগবাজারের বাসায় তাঁর বড় বোন শারমিন ওয়াদুদ নিপাকে জিম্মি করে এক লাখ টাকা চাঁদা চাওয়া হয়। বাসায় টাকা না থাকায় সিটি ব্যাংকের বুথ থেকে ৮০ হাজার টাকা তুলে এবং ২০ হাজার টাকার চেক দিতে হয় চাঁদাবাজদের। টাকা নেওয়ার সময় শাওন নামে একজন হাতিরঝিল থানা যুবদলের নেতা এবং হাবিব নামে একজন থানা যুবদলের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক পরিচয় দেন।

মগবাজারের নয়াটোলায় গ্রিনওয়ে এলাকার ৬৫৩ নম্বর বাসার চতুর্থ তলার ৪/বি ফ্ল্যাট থেকে চাঁদা নেওয়া হয়। ওই বাসায় খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে প্রয়াত খন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলুর স্ত্রী মিতুলের বোন নিপা থাকেন। শাওন, হাবিব, সাজিদ ও সানি সেখানে গিয়ে চাঁদা দাবি করেন। তারা চাঁদা নিয়ে চলে যাওয়ার সময় বাসা ছেড়ে দিতে বলেন। তা না হলে মেরে ফেলার হুমকি দেন।

মিতুল বলেন, ‘শুক্রবার রাতে বড় বোন নিপা ফোন করে জানান, জরুরি ভিত্তিতে এক লাখ টাকা দরকার। ফোন পেয়ে ওই রাতেই তাঁর বাসায় গিয়ে দেখি, চার যুবক চাঁদার জন্য চাপ দিচ্ছে। তাদের আসার কারণ জানতে চাইলে শাওন কোমরে থাকা দেশীয় অস্ত্র বের করে ভয় দেখায়। আমি তাকে বলি, তুমি চেনো আমাদের? তখন উল্টো তারা বলে, আপনি বুঝতেছেন না– এখন সময়টা কী। খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের পরিচয় দেওয়ার পর তারা আরও খারাপ আচরণ করে। মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। কাউকে ফোন করতেও দেয়নি।’

তিনি জানান, ভয়ে রাতেই মগবাজার সিটি ব্যাংকের বুথ থেকে ৮০ হাজার টাকা তুলে সানিকে দেওয়া হয়। আরও ২০ হাজার টাকার একটি চেক দেওয়া হয় তাদের। তবে সেটা দিয়ে তারা টাকা তুলেছে কিনা, জানতে পারেননি। পরদিন শনিবার রাতে আবারও নিপার বাসায় এসে ফ্ল্যাট খালি করার জন্য হুমকি দিয়ে যায় তারা। আগামী মাসের মধ্যে ফ্ল্যাট খালি না করলে তাদের হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়।তিনি জানান, জড়িতদের কাউকে শনাক্ত বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি তাদের অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়নি। তবে পুলিশ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাতিরঝিল থানা বিএনপির এক নেতা  সত্যের পথকে বলেন, ‘বিএনপির সাবেক নেতার বাসায় চাঁদাবাজির বিষয়টি শুনেছি। চাঁদাবাজিতে অভিযুক্ত হাবিব যুবদলের পদে আছে। তবে শাওন, সাজিদ ও সানির পদ নেই। তারা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাফর ইমাম তরফদার মন্টুর সঙ্গে রাজনীতি করে। তাদের নামে এলাকায় এমন আরও অভিযোগ আছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাতিরঝিল থানার ওসি মোহাম্মদ রাজু বলেন, চাঁদাবাজির একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টির তদন্ত চলছে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্তসহ রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। শনাক্তের পর এ বিষয়ে মামলা এবং গ্রেপ্তার করা হবে

Leave a Reply

Scroll to Top