

এশিয়া কাপে গতকাল রাতে সুপার ফোরে ভারত-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে সুপার ওভারে ঘটল এক বিরল ঘটনা। তাতে বিভ্রান্ত হলেন খেলোয়াড়, দর্শক, এমনকি ধারাভাষ্যকারেরাও। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বেঁচে যান শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা।
ঘটনাটি সুপার ওভারে চতুর্থ বলে। ভারতের বাঁহাতি পেসার অর্শদীপ সিং শানাকার অফ স্টাম্পের বাইরে দারুণ এক ইয়র্কার মারেন। শানাকা বলটি খেলতে পরাস্ত হন, বল চলে যায় উইকেটকিপার সঞ্জু স্যামসনের হাতে। অর্শদীপ সঙ্গে সঙ্গে ক্যাচ আউটের আবেদন করেন। মাঠে বাংলাদেশি আম্পায়ার গাজী সোহেল আউট দেন।
অদ্ভুত ঘটনাটা ঘটে এর মধ্যেই। ভারতের উইকেটকিপারের হাতে বল থাকতে শানাকা দৌড়ে এক রান নেওয়ার চেষ্টা করেন। স্যামসন ‘আন্ডারআর্ম থ্রো’ করে স্টাম্প ভাঙেন। তখন ক্রিজ থেকে অনেক দূরে ছিলেন শানাকা। অনেকেই তখন ভেবেছিলেন, শানাকা রান আউট এবং শ্রীলঙ্কার ইনিংস শেষ।
কিন্তু নিয়মের কারণে বেঁচে যান শানাকা। ক্রিকেটের আইন বলছে, আম্পায়ার যখন কোনো ব্যাটসম্যানকে আউট ঘোষণা করেন, তখনই ওই ডেলিভারিটি ‘ডেড’ হয়ে যায়। মানে এরপর যা কিছু ঘটে, তার কোনো গুরুত্ব নেই। গাজী সোহেল ক্যাচের আউট দেওয়ার পর শানাকা সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন। আলট্রা এজে দেখা যায়, ব্যাটে বল লাগেনি। সিদ্ধান্ত বদলে যায়—ক্যাচ আউট হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী এরপর রান আউটের ঘটনাটি বিবেচনার সুযোগ নেই। কারণ, মাঠের আম্পায়ার ক্যাচ আউট দেওয়ার পরই ডেলিভারিটি ডেড হয়ে যায়।
আইসিসির আইনে ২০.১.১.৩ ধারায় বলা হয়েছে, আম্পায়ার আউট ঘোষণা করলেই সঙ্গে সঙ্গে বল ডেড হয়ে যায়। পরে সিদ্ধান্ত উল্টে গেলেও সেই ডেড বলের অবস্থা বদলায় না। তাই রান আউট হওয়া সত্ত্বেও বেঁচে যান শানাকা।
ভারতের সাবেক পেসার ইরফান পাঠান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন। ইরফানের এক্স হ্যান্ডলে এ নিয়ে লেখা হয়, ‘ক্যাচ আউট দেওয়া হয়েছে এবং রিভিউ নেওয়ায় বল (ডেলিভারি) ডেড। আম্পায়ার গাজী সোহেল নিজের অবস্থানটা পরিষ্কার করেছেন ভারতের কাছে। প্রথম সিদ্ধান্তটাই টিকেছে এবং বোলারের প্রান্তের আম্পায়ার যখন আউট ঘোষণা করেছেন, তখনই বলটি (ডেলিভারি) ডেড। এ কারণে শানাকা রান আউট হওয়া থেকে বেঁচে গেছে।’
তবে সুপার ওভারে শানাকা টিকতে পারেননি। পরের বলেই অর্শদীপ তাঁকে আউট করেন। শ্রীলঙ্কা থামে মাত্র ২ রানে। ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব এরপর ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার প্রথম বলেই ৩ রান তুলে ম্যাচ জিতে নেন।

এর আগে দুবাইয়ে ভারতের ২০২ রানের সংগ্রহ তাড়া করতে নেমে শ্রীলঙ্কাও ২০ ওভারে ২০২ করে থামে। শেষ বলে শ্রীলঙ্কার দরকার ছিল তিন রান। তখনো স্ট্রাইকে ছিলেন শানাকা। তিনি নিতে পারেন ২ রান। কালকের আগে খেলা দুই দলের সর্বশেষ টি–টোয়েন্টিও টাই হয়েছিল। গত বছরের জুলাইয়ে পাল্লেকেলেতে হওয়া সেই ম্যাচেও শ্রীলঙ্কা সুপার ওভারে করতে পারে ২ রান। কালকের মতো সূর্যকুমার সেবারও এক বলেই জয় তুলে নেন।