[caption id="attachment_4476" align="aligncenter" width="600"]
পণ্য রাখার নতুন ছাউনি ও ইয়ার্ড যুক্ত হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনালে। সেই সঙ্গে ধীরে ধীরে যুক্ত হচ্ছে জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানো নামানোর জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি। সম্প্রতি চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকার টার্মিনালে[/caption]
চট্টগ্রাম বন্দরের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল বা আরএসজিটি চিটাগংয়ের (সাবেক নাম পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল) বহরে কনটেইনার রাখার নতুন একটি ইয়ার্ড যুক্ত হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনুমোদনের পর সাউথ কনটেইনার ইয়ার্ড নামের নতুন চত্বরটির ব্যবহারও এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। আবার কনটেইনার খুলে পণ্য সরবরাহের নতুন শেড বা ছাউনি যুক্ত হয়েছে। নতুন করে কনটেইনার ওঠানো–নামানোর যন্ত্রপাতিও ধারাবাহিকভাবে যুক্ত হচ্ছে। এতে টার্মিনালটির সক্ষমতা বাড়ছে। সক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় টার্মিনালটির সেবার আওতা বেড়েছে বলে জানিয়েছে এটির পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত সৌদি প্রতিষ্ঠানটি।
গত বছরের জুনে এই টার্মিনাল সরকারি–বেসরকারি অংশীদারত্বের আওতায় সৌদি আরবের বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান আরএসজিটির হাতে দেওয়া হয়। এটি বাংলাদেশের প্রথম টার্মিনাল, যেটি প্রথমবার সরকারি–বেসরকারি অংশীদারির আওতায় দীর্ঘ মেয়াদে পরিচালনার জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে শুরুতে নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে টার্মিনালটির সক্ষমতার পুরোটা ব্যবহার করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। তাতে কনটেইনার ওঠানো–নামানোর হারও ছিল কম। এখন নতুন সুবিধা যুক্ত হওয়ায় টার্মিনালটি ব্যবহার করে পণ্য ওঠানো–নামানোর হার বাড়ছে।
বন্দর কর্মকর্তারা জানান, টার্মিনালটির পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার পর সৌদি আরবভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি শুধু জাহাজে রপ্তানি কনটেইনার বোঝাই করে আসছিল। স্ক্যানার মেশিন বসানোর পর গত মে মাস থেকে জাহাজের আমদানি কনটেইনার নামানো শুরু হয়। আবার টার্মিনালটিতে কনটেইনার রাখার পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় খুব বেশিসংখ্যক জাহাজ ভেড়ানো যাচ্ছিল না। কারণ, চুক্তি অনুযায়ী, সাউথ কনটেইনার ইয়ার্ড সময়মতো বুঝে পায়নি প্রতিষ্ঠানটি।
তবে দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে গত মাসে সাউথ কনটেইনার ইয়ার্ড ব্যবহারের সুযোগ পায় প্রতিষ্ঠানটি। এটিতে একসঙ্গে পাঁচ হাজার একক কনটেইনার রাখার জায়গা রয়েছে। এই চত্বর চালু হওয়ার পর টার্মিনালটি ব্যবহার করে কনটেইনার ওঠানো–নামানোর হারও বেড়েছে। গত বুধবার টার্মিনালটির দুটি জেটিতে দুটি কনটেইনার জাহাজ ছিল। এসব জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানো–নামানোর কাজ চলছিল।
আরএসজিটির তথ্য অনুযায়ী, গত আগস্টে টার্মিনালটিতে ২৪ হাজার ৬০৭ একক কনটেইনার ওঠানো–নামানো হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে ওঠানো–নামানো হয়েছিল ৬ হাজার ৬৮১ একক কনটেইনার। সেই হিসাবে গত বছরের তুলনায় টার্মিনালটিতে কনটেইনার ওঠানো–নামানো বেড়েছে প্রায় ২৬৮ শতাংশ।
আরএসজিটি চিটাগং টার্মিনালে এখন সনাতন পদ্ধতিতে, অর্থাৎ জাহাজের ক্রেন দিয়ে কনটেইনার ওঠানো–নামানো হচ্ছে। কারণ, জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো–নামানোর অত্যাধুনিক চারটি গ্যান্ট্রি ক্রেন তৈরির কার্যাদেশ দেওয়া হলেও তা সরবরাহ করতে ন্যূনতম দেড় বছর সময় লাগে। আরএসজিটি জানিয়েছে, এই অত্যাধুনিক গ্যান্ট্রি ক্রেন চারটি আগামী বছরের মার্চে টার্মিনালের বহরে যুক্ত হবে।
গ্যান্ট্রি ক্রেন আসার আগে কনটেইনার রাখার চত্বরে পরিচালন কার্যক্রমে দক্ষতা বাড়াতে রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি বা আরটিজি ক্রেন যুক্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। আরএসজিটি জানিয়েছে, চারটি আরটিজি ইতোমধ্যে বহরে যুক্ত হয়েছে। আগামী মাসে এই চার ক্রেনের ব্যবহার শুরু হবে। দ্বিতীয় ধাপে অক্টোবরে আরও ১০টি আরটিজি আসবে, যা চালু হবে নভেম্বরে। সবমিলিয়ে ধাপে ধাপে আগামী মে মাসের মধ্যে অত্যাধুনিক সব যন্ত্রপাতি যুক্ত হবে। এসব যন্ত্রপাতি সংযোজনে প্রতিষ্ঠানটি ৬ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
সার্বিক বিষয়ে আরএসজিটি চট্টগ্রামের বাণিজ্য ও জনসংযোগ প্রধান সৈয়দ আরেফ সরওয়ার এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘আমরা শুধু একটি টার্মিনাল গড়ে তুলছি না, গড়ে তুলছি আস্থা, দক্ষতা এবং বাংলাদেশ ও এ অঞ্চলের জন্য ভবিষ্যৎমুখী লজিস্টিকস হাব। টার্মিনালে দ্রুত বিনিয়োগের মাধ্যমে আমরা বিশ্বমানের সেবা প্রদান করতে চাই। বন্দরের দক্ষতার নতুন নতুন মানদণ্ড স্থাপন করছে এ টার্মিনাল।’