বদিউল আলমের মন্তব্য: গণভোটে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার

বিএফডিসি মিলনায়তনে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র অয়োজনে ছায়া সংসদে বদিউল আলম মজুমদার। ছবি: সত্যের পথে

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হলেও গণভোটের সুযোগ আছে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, গণভোটের বিষয়ে ইসির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সরকারকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) মিলনায়তনে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে ‘আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হলেই গণতন্ত্র সুরক্ষিত হবে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে বদিউল আলম মজুমদার এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আশা করছি, রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে। গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একদিনেই হবে কিনা এ ব্যাপারে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। তবে এ বিষয়ে সরকার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত নেবে।

সুজন সম্পাদক বলেন, গণভোট যেন দেশের মানুষের সম্মতি পায়, গণভোটে যেন ‘হ্যাঁ’ ভোট পড়ে তার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে। শেখ হাসিনা সরকার স্বৈরাচারী ব্যবস্থা রেখে গেছে। জুলাই জাতীয় সনদ পাশের মাধ্যমে সেই কাঠামোর সংস্কার দরকার।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, জুলাই সনদ স্বাক্ষরের পর পরবর্তী সরকার সেটি বাস্তবায়ন না করলে তাদের পরিণতিও শেখ হাসিনার সরকারের মতো হবে। ক্ষমতার পালাবদল হলেও যেন দুর্নীতির পালাবদল না হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। দেশে গণতন্ত্রের সুরক্ষায় সুষ্ঠু নির্বাচনের পাশাপাশি নির্বাচিত সরকারকে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও দেশের রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন জানিয়ে সুজনের সম্পাদক বলেন, নির্বাচন ও রাজনৈতিক দল থেকে দুর্বৃত্তায়ন দূর করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও কার্যকর করা দরকার। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করা দরকার।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, শঙ্কা কাটিয়ে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে। জুলাই সনদ নিয়ে ঐকমত্যের বিষয় এখন সিলভার লাইন থেকে গোল্ডেন লাইনে পরিণত হয়েছে। গণতন্ত্রকামী প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলই একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রত্যাশা করছে। দেশের মানুষও অপেক্ষায় আছে কখন তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন।

তিনি আরও বলেন, আগামী ১৫ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জুলাই সনদ স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর রেষারেষির কারণে জুলাই সনদ স্বাক্ষরে যদি প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়, তাহলে দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। বিগত ১৬ বছরের শাসন আমলে ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্যায়, অত্যাচার, গুম-খুন হত্যাসহ জুলাই বিপ্লবে শহীদের হত্যার বিচার বাধাগ্রস্ত হবে। দেশের আইনশৃঙ্খলার ওপর গভীর প্রভাব পড়বে। পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি ফিরে আসার শঙ্কা তৈরি হবে। হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। আশা করি, বিভেদের রাজনীতি পরিহার করে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে ফ্যাসিস্টবিরোধী প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ থাকবে।

এর আগে ছায়া সংসদে তেজগাঁও কলেজ ও প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সিনিয়র সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক মো. হুমায়ূন কবীর ও সাংবাদিক জাকির হোসেন লিটন।
প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

Leave a Reply

Scroll to Top