ধর্ষণ, নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন আলোচিত কণ্ঠশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেল। অভিযোগ, তিনি এক নারীকে সাত মাস ধরে একটি বাসায় আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়েছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওর সূত্র ধরেই ভুক্তভোগীকে উদ্ধার ও নোবেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ২০১৮ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নোবেলের সঙ্গে পরিচয় হয় ইডেন কলেজের এক শিক্ষার্থীর। ধীরে ধীরে তাদের মাঝে যোগাযোগ বাড়ে। গত বছরের ১২ নভেম্বর নোবেলের সঙ্গে মোহাম্মদপুরে দেখা করতে গেলে ‘স্টুডিও দেখানোর’ কথা বলে তিনি ওই ছাত্রীকে ডেমরার একটি বাসায় নিয়ে যান। অভিযোগ, সেখানে তার মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলা হয়, তাকে মারধর ও ধর্ষণ করা হয় এবং সেই ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করা হয়।
সাত মাস ধরে সেই বাসাতেই বন্দি অবস্থায় ছিলেন ছাত্রীটি। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, নোবেল এক নারীকে সিঁড়ি দিয়ে জোর করে নিচে নামিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ভিডিওটি দেখে ওই ছাত্রীর পরিবার তাকে চিনে ফেলেন এবং ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি জানান। ১৯ মে রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ছাত্রীটিকে উদ্ধার করে এবং রাত ২টার দিকে প্রযুক্তির সহায়তায় নোবেলকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে, পুরো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক স্ট্যাটাসে মুখ খুলেছেন নোবেলের সাবেক স্ত্রী সালসাবিল। তিনি বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার বিভিন্ন বক্তব্য ছড়িয়ে পড়েছে,এর মধ্যে কিছু সত্য, আবার অনেকটাই ভ্রান্ত ও উদ্দেশ্যমূলক। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, ছড়ানো সব কথাই আমার বলা নয়। আর কেউ যদি মনে করে, এই মোবাইল ও প্রযুক্তির যুগে কাউকে সাত মাস ধরে জোরপূর্বক আটকে রাখা বা এমন অপরাধ সংঘটিত করা সম্ভব. তাহলে সেটি বাস্তবতাবিরুদ্ধ ও সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর ও হাস্যকর একটি ধারণা।”
গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “নোবেল একজন নেশাগ্রস্ত মানুষ। সে দীর্ঘদিন রিহ্যাবে ছিল। তার সঙ্গে কেউ টানা সাত মাস থাকবে, এটা আমি কল্পনাও করতে পারি না। তবে যেহেতু আইনি অভিযোগ উঠেছে, সত্য-মিথ্যা আদালতেই প্রমাণিত হবে। আমিও সেই ফলাফলের অপেক্ষায় আছি।”
বর্তমানে পুলিশ মামলার তদন্তে ব্যস্ত। নোবেল কারাগারে রয়েছেন। তদন্ত শেষে আদালতে মামলার বিস্তারিত তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।