দেশে আবারও উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪১৩ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে এ সময়ে কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হালনাগাদ তথ্যে বলা হয়েছে, শনিবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায় ১৫১ জন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর পরেই রয়েছে বরিশাল বিভাগ, যেখানে এক দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩২ জন। চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৩, ঢাকা জেলার বাইরে ঢাকা বিভাগে ২২ ও ময়মনসিংহে ১৫ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। রাজশাহী, খুলনা, রংপুর ও সিলেট বিভাগে এদিন কোনো নতুন রোগীর তথ্য পাওয়া যায়নি।
সর্বশেষ পাঁচ মাসের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এতদিন আক্রান্তের সংখ্যায় শীর্ষে ছিল বরিশাল বিভাগ। তবে এবার তাতে শীর্ষে উঠে এসেছে ঢাকা মহানগর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এখন পর্যন্ত (শনিবার পর্যন্ত) শুধু ঢাকা মহানগরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৪ হাজার ৬৮০ জন, মৃত্যু হয়েছে ১৪২ জনের। বরিশাল বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ হাজার ৬৬৮, মৃত্যু হয়েছে ৩৩ জনের। আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় স্থানে থাকা চট্টগ্রাম বিভাগে এ পর্যন্ত আট হাজার ৭৬ জন আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের। ঢাকার বাইরে ঢাকা বিভাগে আক্রান্ত আট হাজার ৩৭ জন, মৃত্যু হয়েছে দুজনের।
চলতি বছরে দেশে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৫৩ হাজার ৬০৬ জন, মৃত্যু হয়েছে ২২৪ জনের অর্থাৎ ০.৪১ শতাংশ। আক্রান্ত ও মৃতদের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মোট আক্রান্তের ৫৬.৭৭ শতাংশ এবং মৃতের ৫০ শতাংশ বয়সে ৩০ বছরের কম। পাশাপাশি ৫৭.৮৯ শতাংশ মৃত্যু ঘটেছে হাসপাতালে ভর্তির প্রথম দিনেই।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার (সিডিসি) লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক হালিমুর রশীদ জানান, অনেক রোগীই তিন থেকে ছয় দিন জ্বরে ভুগে হাসপাতালে আসছেন। মৃত্যুর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১১৪ জন মৃত্যুর মধ্যে ৫৭.৮৯ শতাংশই ভর্তি হওয়া প্রথম দিনে মারা গেছেন। এসব মৃত্যুর বড় অংশ ঘটেছে ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কারণ এক্সপান্ডেড ডেঙ্গু সিনড্রোম, যার মধ্যে রয়েছে কার্ডিয়াক শক।
তিনি আরও জানান, দেশে ডেঙ্গুর চারটি ধরন (ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ ও ডেন-৪) থাকলেও ২০১৮ সালের পর ডেন-১ তেমন দেখা যায়নি। ২০২১ সালে ডেন-৩ ছিল প্রধান। চলতি বছর ডেন-২ ও ডেন-৩ ধরনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। একাধিক ধরন সক্রিয় থাকায় রোগের তীব্রতা বাড়ছে বলে মনে করছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।