[caption id="attachment_6113" align="aligncenter" width="591"]
ছবি: সত্যের পথে[/caption]
নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার দুই সপ্তাহ পর কিছু ছাত্র সংগঠন ও শিক্ষকদের ফোরাম বা সংগঠন নির্বাচনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা শুরু করেছেন বলে দাবি করে ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক (ইউটিএল)। এ বিষয়কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর স্বাধীন রায়কে অসম্মান এবং গণতান্ত্রিক অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার একটি সুপরিকল্পিত প্রয়াস বলেও মন্তব্য করেন তারা।
আজ শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনটির সদস্যরা। এ সময় সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তারা তিনটি দাবি তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইউটিএলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. আতাউর রহমান বিশ্বাস। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদের সংগঠন হিসেবে ইউটিএল মনে করে, ডাকসু শুধু ছাত্র নেতৃত্বের মঞ্চ নয়, বরং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক একাডেমিক পরিবেশ, নিরাপত্তা, নীতি ও গণতান্ত্রিক চর্চার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত। তাই শিক্ষকদের দায়িত্ববোধ থেকেই আমরা ডাকসু নির্বাচনের শুরু থেকে আমাদের মতামত উপস্থাপন, নির্বাচন কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে শংকা এবং দাবি উপস্থাপন, পরামর্শ প্রদান, নির্বাচনের দিন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছি। এছাড়া আমরা সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনার স্বার্থে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিবৃতি দিয়েছি, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি।’
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার দুই সপ্তাহ পর কিছু ছাত্র সংগঠন ও শিক্ষকগণের ফোরাম/সংগঠন নির্বাচনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা শুরু করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর স্বাধীন রায়কে অসম্মান এবং গণতান্ত্রিক অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার একটি সুপরিকল্পিত প্রয়াস ব্যতীত আর কিছুই নয়। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের মুক্তচিন্তা, ন্যায়বিচার এবং গণতান্ত্রিক অধিকারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। শিক্ষার্থীদের রায় স্পষ্টভাবে প্রমাণ করেছে যে, তারা ভীতিকর রাজনৈতিক সংস্কৃতি, প্রোপাগাণ্ডা এবং একদলীয় মানসিকতার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে সক্ষম।’
এ সময় তারা কিছু পর্যবেক্ষণ সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। নির্বাচনের দিনটি ছিল উৎসবমুখর, আনন্দময় এবং শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক চর্চার সজীব উদাহরণ। কেন্দ্রে উপস্থিতি, ব্যালট গ্রহণ ও সার্বিক ক্যাম্পাসের পরিবেশ প্রমাণ করেছে যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দায়িত্বশীল, সচেতন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাসী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রামী ঐতিহ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ধর্মীয় মূল্যবোধ ও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী শিক্ষকগণের সংগঠন সাদা দল ডাকসু নির্বাচন নিয়ে এক হতাশাজনক বিবৃতি প্রদান করেছে। জুলাই পরবর্তী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামোতে সংগতকারণে সাদা দল নেতৃত্ব দিচ্ছে। আধিপত্যবাদী চিন্তা শিক্ষার্থীদের স্বাধীন মতপ্রকাশকে সীমিত করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে মুক্তচিন্তার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে।
তাদের উত্থাপিত তিনটি দাবি হলো:
১. বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উত্থাপিত অযৌক্তিক প্রশ্নের সুরাহা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের পর কোনো ধরনের হ্যারেসমেন্ট কিংবা তাদের ম্যান্ডেট কেড়ে নেওয়ার মতো কর্মকাণ্ড বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
২. ঢাবি সাদা দলের শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে পরিচালিত নির্বাচনকে সাদা দলের প্যাডে বিবৃতি দিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে, যা মোটেই কাম্য নয়। এই ধরনের বিবৃতি প্রত্যাহার করার আহ্বান জানাই।
৩. ২০২৫ সালের ডাকসু নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় ইতোমধ্যে দেশ বিদেশে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। এমন নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে যেসকল তৎপরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে, সেগুলোর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জোর দাবি জানাচ্ছি।