
যারা ১৫ বছর ধরে ফেইসবুক ব্যবহার করেছেন তাদেরকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে বেশি অর্থ দেবে মার্কিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জায়ান্ট মেটা।
অবশেষে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ডেটা কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ৭২ কোটি ৫০ লাখ ডলারের মামলা নিষ্পত্তি থেকে নিজেদের অংশের অর্থ পেতে শুরু করেছেন কোটি ফেইসবুক ব্যবহারকারী।
২০০৭ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক ব্যবহার করেছে তারা এ ক্ষতিপূরণের অর্থ পাবেন। সবাই এ অর্থ পাবেন না, কারণ ২০২৩ সালের অগাস্টের মধ্যে যারা আবেদন করেছিলেন তারাই কেবল এ অর্থ পাবেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
আদালতের নথি অনুসারে, একজন ব্যবহারকারী ৩০ ডলার করে ক্ষতিপূরণ পাবেন। যাদের আবেদন অনুমোদন হয়েছে তাদেরকে ফেইসবুকের পক্ষ থেকে এক ইমেইল পাঠানো হবে donotreply@facebookuserprivacysettlement.com এই ঠিকানা থেকে, যেখানে ব্যবহারকারী কত অর্থ পাবেন তার উল্লেখ থাকবে।
আদালতের নথিতে আরও উল্লেখ রয়েছে, যারা ১৫ বছর ধরে ফেইসবুক ব্যবহার করেছেন তাদেরকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে বেশি অর্থ দেবে মার্কিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জায়ান্ট মেটা।
২০২৪ সালে কোম্পানিটি বলেছে, যেসব ব্যবহারকারী বেশি দিন ধরে ফেইসবুকে সক্রিয় ছিলেন তাদের ব্যক্তিগত তথ্য বেশি সময় ঝুঁকিতে ছিল। ফলে তারা ক্ষতিপূরণের অর্থ অন্যদের চেয়ে বেশি পাবেন।”
ফেইসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য অবৈধভাবে ব্যবহারের ঘটনা প্রথম প্রকাশ পেয়েছিল ২০১৮ সালে। ওই সময় ব্রিটিশ পরামর্শক কোম্পানি ‘কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা’র এক সাবেক কর্মী জানিয়েছিলেন, ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণায় অবৈধভাবে ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করেছিল সে সময়ের ফেইসবুক।
সে সময় প্রায় আট কোটি ৭০ লাখ ফেইসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য অবৈধভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল। তদন্তকারীরা বলেছেন, এ কাজ ২০১১ সালে ফেইসবুক ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশনের মধ্যে করা এক সম্মতি চুক্তির লঙ্ঘন।
মামলা নিষ্পত্তির অংশ হিসেবে কোনো ভুল স্বীকার করেনি ফেইসবুকের মূল কোম্পানি মেটা। তারা বলেছে, ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষার জন্য ‘আরও ভালো ব্যবস্থা’ নেবে কোম্পানিটি। আর তৃতীয় পক্ষের জন্য ব্যবহারকারীর তথ্যে প্রবেশের বিষয়টি সীমিত করবে তারা।
২০২৪ সালের এক আইনি নথি অনুসারে, মামলা নিষ্পত্তির পরে প্রায় দুই কোটি ৯০ লাখ ব্যবহারকারী অর্থ পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। যাদের মধ্যে প্রায় এক কোটি ৯০ লাখ ব্যবহারকারীর দাবি আইনগতভাবে সঠিক এবং তারা অর্থ পাওয়ার যোগ্য।
এসব ব্যবহারকারী পেপাল, ভেনমো, জিল বা দাবি ফর্মে দেওয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এ ক্ষতিপূরণের অর্থ পাবেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেনডেন্ট।
এ মামলা মীমাংসার ওয়েবসাইটে সাম্প্রতিক এক আপডেটে বলা হয়েছে, “ক্ষতিপূরণের অর্থ বিতরণ শুরু হয়েছে, যা প্রায় ১০ সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে।”