[caption id="attachment_1138" align="alignnone" width="555"]
রাত দুইটার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে[/caption]
অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দৃষ্টি এখন জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের দিকে। দলটির নেতারা বলছেন, তাঁরা চান এই ঘোষণাপত্র যাতে ঘোষিত সময়সীমার মধ্যেই করা হয়। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দলীয় নিবন্ধনের শর্ত পূরণও তাঁদের অগ্রাধিকারে রয়েছে।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী তরুণদের দল এনসিপি শুরু থেকেই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে আসছিল। পাশাপাশি জুলাই ঘোষণাপত্র, মৌলিক সংস্কার, গণপরিষদ নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনও এনসিপির অন্যতম দাবি ছিল।
এর মধ্যে গণপরিষদ নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি ইদানীং খুব একটা আলোচিত হচ্ছে না।
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয়েছে যে আন্দোলনের মুখে, ৮ মে সেটার সূচনা করেন মূলত এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগের পর হাসনাত এককভাবে এই আন্দোলনের ডাক দেন। অবশ্য পরে ওই রাতে এনসিপির আহ্বায়ক, সদস্যসচিবসহ শীর্ষ নেতারা সরাসরি গিয়ে আন্দোলনে অংশ নেন। যদিও হাসনাতের ডাকে এই আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, হেফাজতে ইসলামের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য।
এই অবস্থায় স্বাভাবিকভাবে রাজনৈতিক অঙ্গনে কৌতূহল আছে, এনসিপি এরপর কোন দাবি বা বিষয় সামনে আনতে যাচ্ছে।
আপাতত সেভাবে বড় কোনো কর্মসূচি না থাকলেও দলটির নেতাদের দৃষ্টি জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের দিকে। ১০ মে রাতে অন্তর্বর্তী সরকার উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভা ডেকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব প্রথম আলোকে বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার যে এক মাস সময়সীমা দিয়েছে, এই সময়ের মধ্যেই যেন জুলাই ঘোষণাপত্র জারি হয়, সেটাই এখন আমাদের প্রধান রাজনৈতিক লক্ষ্য।’ তিনি বলেন, এর পাশাপাশি গণপরিষদ নির্বাচন ও মৌলিক সংস্কারও এনসিপির অন্যতম লক্ষ্য।
অবশ্য নির্বাচন কমিশনে দলীয় নিবন্ধনের শর্ত পূরণও এনসিপির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আড়াই মাস আগে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করে এনসিপি। এর পর থেকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধনের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে দলটি। ইসি ইতিমধ্যে নিবন্ধনের আবেদনের সময়সীমা বাড়িয়ে ২২ জুন করেছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সাংগঠনিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে এনসিপির একটা অগ্রাধিকার হচ্ছে দেশব্যাপী দলের জেলা কমিটিগুলো করা। এ জন্য দেশের উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের জন্য আলাদা দুটি সাংগঠনিক টিম গঠন করা হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের টিমে মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যিনি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার আন্দোলনের অন্যতম প্রধান মুখ। আর উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। দুই টিমকে ৩০ দিনের মধ্যে জেলা কমিটিগুলো করতে বলা হয়েছে।
বিদ্যমান আইনে ইসিতে নিবন্ধনের জন্য কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পাশাপাশি কমপক্ষে ২২টি জেলা ও ১০০টি উপজেলায় দলীয় কার্যালয় থাকতে হয়।
এরই মধ্যে এনসিপির কয়েকটি উইং ও সেল তৈরি করা হয়েছে। দলটির শৃঙ্খলা কমিটি ও রাজনৈতিক লিয়াজোঁ কমিটিও গঠিত হয়েছে। দলের যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তি ১৬ মে আত্মপ্রকাশ করেছে। আত্মপ্রকাশের অপেক্ষায় আছে জাতীয় নারী শক্তি ও জাতীয় শ্রমিক শক্তি।