

সাজ্জাদ হায়দার কথাসাহিত্যিক হিসেবে সুপরিচিত নন। তাঁর লেখা অলৌকিকপুরের দুই রূপসী একটি সাহিত্য পত্রিকায় ছাপা হলেও আলোচনার অভাবে বহুল পঠিত হয়নি। বই আকারে বের হওয়ার পরও এটি নানা কারণে অনাদৃত ছিল। এখনো মনে হয় তেমনই আছে। অভিনব উপন্যাস লিখেছেন সাজ্জাদ। অ্যালিগরিক্যাল, রূপকধর্মী কাহিনিতে মিশেছে পরাবাস্তববাদ আর ম্যাজিক রিয়েলিজম।
সাজ্জাদ হায়দারের এই বই পড়তে গিয়ে রোমকূপ দাঁড়িয়ে যায়। কয়েকটি প্রধান চরিত্র, কিন্তু বিষয়ে রয়েছে মিথের গাম্ভীর্য আর ভয়ানকের পদধ্বনি। ক্রমে শুকিয়ে যাওয়া নদী আর স্থির অনড় বটগাছ, দুই বৃদ্ধা ভিক্ষুক এবং নদীর তীরবর্তী গ্রাম—এসব নিয়েই কাহিনির শুরু। নদীতীরে দাঁড়িয়ে থাকা বটগাছে থাকে এক অদৃশ্য সিদ্ধপুরুষ। একদিন সেই পুরুষ স্বরূপে দেখা দেবে, গ্রামবাসীকে বর দেবে আর সেই বরে গ্রামের তিন শ পরিবারের ভাগ্য ফিরবে। এই বিশ্বাসে শত অভাবেও গ্রামবাসী গ্রাম ছেড়ে যায় না। যুগ যুগ ধরে তারা সেই সিদ্ধপুরুষের অপেক্ষা করে।
এক ঝড়ের রাতে আলাপী আর গোলাপী নামের দুই বৃদ্ধা ভিখারি এক অলৌকিক ছাগল পায় আর তারা বৃদ্ধা থেকে ষোড়শী তরুণীতে পরিণত হয়। বিক্রি হয় ছাগলের দুধ, যা পান করে সবাই যৌবন ফিরে পায়। দুই ভিক্ষুক পায় ধন আর প্রতিপত্তি। এরপর শুরু হয় তাদের কেন্দ্র করে শহর আর গ্রামের কিছু মানুষের কীর্তিকলাপ। বদলে যায় কিছু মন্দ মানুষের জীবন।