রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির মনোনীত প্যানেল আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছে। ছাত্রশিবিরের দাবি, ছাত্রদল টাকা ছড়িয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করছে। অন্যদিকে ছাত্রদলের অভিযোগ, শিবির উপহার ও খাবার বিতরণ করে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করছে।
গত মঙ্গলবার দুপুর ১টায় ছাত্রশিবির মনোনীত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেয়। পরে বিকেল সাড়ে ৪টায় ছাত্রদল মনোনীত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেল পাল্টা অভিযোগ দাখিল করে।
অভিযোগপত্রে ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের নেতারা বলেন, ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী ও সমর্থকরা বিভিন্ন হল ও বিভাগে ভোটারদের খাবার ও বিশেষ উপহার দিচ্ছেন। এটি নির্বাচনী লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বিনষ্ট করছে ও নির্বাচনের স্বাভাবিক পরিবেশ প্রভাবিত হচ্ছে। তারা নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান। এ ছাড়া আবেদনপত্রে তারা সংযুক্তিতে ‘প্রমাণস্বরূপ’ ছাত্রী হলের বৈঠকে খাবার বিতরণের বিভিন্ন স্থিরচিত্র যুক্ত করেন।
এ বিষয়ে ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবির বলেন, ছাত্রশিবির শুরু থেকে কালো টাকা ছড়াচ্ছে। উপহার-উপঢৌকন, খাবারের প্যাকেট, আতর বিতরণ করছে। আমরা তাদের এগুলো বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা সেটি না করে আজ আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ দিয়েছে। আমরা এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনে প্রমাণসহ অভিযোগপত্র দিয়ে তাদেরকে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এদিকে, ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের বিরুদ্ধে টাকা ছড়ানোর অভিযোগ নির্বাচন কমিশনে লিখিতভাবে জানিয়েছে ছাত্রশিবির মনোনীত প্যানেল। লিখিত অভিযোগে তারা বলেন, ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা শ্রেণিকক্ষে ঢুকে প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্ধারিত সময়ের বাইরে প্রচার কার্যক্রম করছেন। আরবি বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ভোট প্রভাবিত করতে পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছেন। ভোটার নন, এমন ব্যক্তিরা তাদের প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন।
অভিযোগ জমা দিয়ে শিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, ‘এর আগেও ছাত্রদল আচরণবিধি ভঙ্গ করেছে। রাকসু নির্বাচন যাতে অংশগ্রহণমূলক হয় এবং সবাই সমান সুযোগ পায়, সে লক্ষ্যে আমরা এখন অভিযোগ দিয়েছি।’
এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অভিযোগগুলো যাচাই-বাছাই করে উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসব। আশা করব, এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না।’