মৌসুম শেষ হলেও চারা সংকট, আমন আবাদ ঝুঁকিতে।

আমন আবাদের সময় শেষ। অথচ ঝালকাঠির রাজাপুরে চারার সংকটের কারণে অনেক জমিতে চারা রোপণ করতে পারেননি কৃষক। কিছু স্থানে চারা পেলেও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার কারণে বীজতলা পচে যাওয়ায় এ সংকট দেখা দিয়েছে। এতে আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না বলে কৃষকের মনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জেলায় চলতি আমন মৌসুমে ৪৬ হাজার ৭শ ৭০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। রাজাপুরে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১ হাজার ২৫০ হেক্টরে। এর মধ্যে জেলায় মাত্র ৬ হাজার হেক্টরে আমন রোপণ করা হয়েছে। কিন্তু এখনও ৪০ হাজার ৭শ ৭০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চারা রোপণ করা সম্ভব হয়নি।

বাগড়ি গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন জানিয়েছেন, বৃষ্টিতে পানি জমে বেশির ভাগ ক্ষেতের বীজতলা পচে গেছে। এ কারণে চারা রোপণ করা সম্ভব হয়নি। এখনও অনেক নিচু এলাকায় পানি জমে আছে। চড়া দামের কারণে বীজ সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় জমি অনাবাদি থাকার আশঙ্কা রয়েছে। 

শুক্তাগড় গ্রামের কৃষক শাহিন জানান, জমিতে পানি। বীজতলা পচে গেছে। দূরদূরান্ত থেকে কিনে এনে কিছু জমিতে চারা রোপণ করেছি, যাতে অন্তত জমি পতিত না থাকে। বাগড়ি বাজার এলাকার কৃষক বাবুল হোসেন জানান, বীজ পাওয়া যাচ্ছে না। পাওয়া গেলেও দাম বেশি। এদিকে শ্রমিক খরচও বেড়েছে। এ অবস্থায় উৎপাদন খরচ দাঁড়িয়েছে কয়েক গুণ। জমি চাষাবাদ করে এখন লাভ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

জীবনদাশকাঠি গ্রামের কৃষক বেলায়েত হোসেন জানান, বীজের সংকট তো আছেই। তার মধ্যে বদলা খরচ, চাষ খরচ রয়েছে। পানি না কমায় বীজতলায় শেওলা ধরে পচে গেছে।

কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুল হোসেন আকন জানান, কৃষকদের অন্য এলাকা থেকে বীজ সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। ফলন ধরে রাখতে মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের সব রকম পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, সম্প্রতি অতিবৃষ্টির ফলে আমনের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত। তবে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রান্তিক চাষিদের বীজ সংকট কাটাতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে আমন রোপণ করা হয়েছে। বীজতলার ক্ষতি পুষিয়ে উৎপাদন লক্ষমাত্রা পূরণ হবে, এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Scroll to Top