ফের চাঁদাবাজির অভিযোগ, ধরা পড়লেন মুচলেকায় মুক্ত হওয়া সেই সমন্বয়ক।

সংগৃহীত ছবি

‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজির সময় সাবেক সমন্বয়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিসহ (২৮) পাঁচজনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। গতকাল রবিবার রাত ৯টায় তাদের আটক করা হয়। পরে চাঁদাবাজির মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এর আগে ‎ধানমন্ডি এলাকায় মব তৈরি করে চাঁদা দাবি করার অভিযোগে ধানমন্ডি মডেল থানায় গ্রেপ্তার হন রাব্বি। সে সময় তাকে থানা থেকে মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে নেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হান্নান মাসউদ।

গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন- হাসিবুর রহমান ফরহাদ (৩১), আবদুর রহমান মানিক (৩৭), আবু সুফিয়ান (২৯) ও মো. শাহিন (৩৮)। তারা সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মোহাম্মদপুর থানা শাখার পদধারী নেতা।

পুলিশের একটি সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম রাব্বি মোহাম্মদপুর থানায় একটি চাঁদাবাজি মামলার চার নম্বর আসামি। দীর্ঘদিন তিনি পলাতক ছিলেন। তিনি মোহাম্মদপুর থানার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ছিলেন। এরপর তাকে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি থেকে বহিষ্কার করা হয়।

জানা গেছে, বসিলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে একটি শিশু মারা যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে সেখানে চাঁদা দাবি করে একটি চক্র। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তাদের কয়েকজন এসে হাসপাতালের মালিকের কাছে চাঁদা চেয়ে মব তৈরি করে। হাসপাতালের মালিক সেনাবাহিনীকে ফোন করলে তারা এসে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।

এ বিষয়ে হাসপাতালের মালিক শিল্পী আক্তার বলেন, ‘আমার হাসপাতালে একটি মৃত শিশু জন্ম নেওয়াকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যায় কয়েকজন চাঁদা চেয়ে হুমকি দেয়। কয়েক দফায় তারা আমার এবং আমার ছেলের কাছে চাঁদা চাইছিল। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আরও কয়েকজন সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে আমার প্রতিষ্ঠানে যায়। আমি এ অবস্থা দেখে সেনাবাহিনীকে ফোন করলে তারা ঘটনাস্থলে এসে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পাঁচজনকে নিয়ে যায়।’

পরে থানায় গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা করেছেন বলেও জানান হাসপাতালের মালিক।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক। তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজির ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে সেনাবাহিনী। এদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির দায়ে একজন হাসপাতাল মালিক মামলা করেছেন।’

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রাব্বি নামে একজনের নামে চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে জানিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে আদালতে পাঠাব।’

প্রসঙ্গত, গত ১৯ মে রাতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে হাক্কানী পাবলিশার্সের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার বাসা ঘেরাও করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। এরপর বাসার দারোয়ানকে ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন তারা। ৯৯৯-এ কল করে পরিস্থিতি জানিয়ে অভিযোগ করলে পুলিশ এসে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন মোহাম্মদপুর থানার সমন্বয়ক রাব্বিসহ কয়েকজনকে আটক করে।

এ ঘটনার পরদিন ধানমন্ডি থানায় উপস্থিত হয়ে বৈষম্যবিরোধী নেতা হান্নান মাসউদ মুচলেকা দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে আনেন। সে সময় রমনা বিভাগের পুলিশের উপ-কমিশনার মাসুদ আলম জানিয়েছিলেন, ভবিষ্যতে তারা এ ধরনের কাজে জড়িত হবেন না, এই মর্মে মুচলেকা দিয়েছেন। তাই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Scroll to Top