

কয়েকদিন আগের কথা। পথে হাঁটতে হাঁটতে এক রাস্তার মোড়ে আমার বয়সী এক শিশুকে দেখলাম। তার হাতে লাল, নীল, সবুজ, বেগুনিসহ নানা রঙের বেলুন। এগুলো হাঁটতে হাঁটতে বিক্রি করছিল সে।
শিশুটির মুখে দারিদ্র্যের ছাপ স্পষ্ট। বয়স হবে ১০ কিংবা ১২। চোখে যেমন শিশুসুলভ কৌতূহল তেমনই ফুটে উঠেছে জীবনের কঠিন বাস্তবতা।
আমি ভাবতে থাকলাম তার কথা। সারা দিন রোদে, বৃষ্টিতে এমনকি রাতেও সে হাঁটতে হাঁটতে বেলুন বিক্রি করে। অন্য শিশুদের মুখে হাসি ফোটে তার দেওয়া বেলুনে। অথচ নিজের মুখে সেই হাসি খুব একটা দেখা যায় না, যদিও সে একজন শিশু।
অন্য শিশুদের বেলুন নিয়ে আনন্দ করতে দেখে হয়ত সে মনে মনে ভাবে, আমি যদি ওদের মতো খেলতে পারতাম। কিন্তু তার হাতে থাকা বেলুনগুলো খেলার জন্য নয়, এগুলো তার ভাত আর কাপড়ের জন্য। একটি বেলুন বিক্রি মানেই সেদিন পেট ভরে খাওয়ার নিশ্চয়তা।
আমার মনে হল, তার হয়ত স্কুলে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। বই-খাতা নেই, স্কুলের পোশাকও নেই। কিন্তু জীবনের বইয়ের পাতায় সে আগেভাগেই শিখে নিয়েছে সংগ্রামের কঠিন পাঠ।
আমি চাই, দেশের সব শিশুর হাতে থাকুক খেলার বেলুন, পড়াশোনার বই-খাতা আর রঙিন স্বপ্ন। যেন প্রতিটি শিশু আকাশের দিকে তাকিয়ে নিজের বেলুন উড়িয়ে বলতে পারে, এই পৃথিবীটা তারও।